| খালেক হাসান: নারীর স্বনির্ভরতা ও প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই উন্নয়নে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নে ২৪ জুন ২০২৫ অনুষ্ঠিত হলো এক অনুপ্রেরণামূলক উঠান বৈঠক। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত এই বৈঠকে অংশ নেন প্রায় ৪০ জন নারী খামারি, যারা নিজেদের ঘরে গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, আঞ্চলিক অফিস কুমিল্লার কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক খালেক হাসান এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল ইউনিট অপারেটর সৌরভ কুমার ঘোষ। মাঠপর্যায়ের প্রশিক্ষণ ও তথ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় নারী টিম লিডার রাজিয়া আক্তার জানান, ২০২৩ সালে তারা একটি স্বনির্ভর খামারি সমিতি গঠন করেন। সদস্যরা প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে সঞ্চয় করে একটি তহবিল গড়ে তুলেছেন, যা দিয়ে পশুখাদ্য, চিকিৎসা ও খামারের অন্যান্য ব্যয় পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অফিসের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ পেয়ে তারা এখন সফলভাবে খামার পরিচালনা করছেন।
উঠান বৈঠকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এলএসপি আনজু মনোয়ারা জানান, “নারীরা যেন নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে, আয় করতে পারে—এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। উঠান বৈঠকগুলো তাদের আত্মবিশ্বাস তৈরি করে এবং বাস্তবিক জ্ঞান দেয়।” বৈঠকে গবাদিপশুর খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাসস্থান, রোগ প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও পরিচর্যার নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারী নারীদের মাঝে প্রাণিসম্পদ বিষয়ক ছাপানো তথ্যপত্রও বিতরণ করা হয়। কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক খালেক হাসান বলেন, “আমরা তথ্য ও প্রশিক্ষণ খামারিদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। এই বৈঠক সেই প্রচেষ্টারই একটি অংশ।” অডিও-ভিজ্যুয়াল ইউনিট অপারেটর সৌরভ কুমার ঘোষ জানান, “বৈঠকের কার্যক্রম আমরা ডকুমেন্ট করছি যেন ভবিষ্যতে আরও মানুষ এর উপকারিতা জানতে পারে।” স্থানীয়দের মতে, এ ধরনের উদ্যোগ শুধু প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নই নয়, নারীর ক্ষমতায়ন ও পারিবারিক আয়ের পথও সুগম করছে। নারীরা এখন নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছেন, সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সঞ্চয় করছেন এবং ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন। – খালেক হাসান, কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, কুমিল্লা। |
বুড়িচংয়ে উঠান বৈঠক: নারী খামারিদের স্বাবলম্বিতার গল্প



